ফের জিপিএ ফাইভ বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এবার অভিযোগের তীর ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অদ্বৈত কুমার রায় ও রাজধানীর একটি শিক্ষা মাফিয়া চক্রের সদস্যদের দিকে। চক্রের একজন সদস্য রাজধানীর উত্তরা ন্যাশনাল পাবলিক কলেজের একজন শিক্ষক ও ঢাকা শিক্ষার্বোর্ডের কর্মচারি ইউনিয়নের একজন নেতা। উত্তরার ৪ নং সেক্টরে অবস্থিত ন্যাশনাল পাবলিক কলেজ। চক্রের আরেক সদস্য ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের সাবেক কলেজ পরিদর্শক ও বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের উপসচিব। আরেক প্রভাবশালী সদস্য বি সি এস সাধারণ শিক্ষা সমিতির প্রভাবশালী নেতা ও বোর্ড অফিসেই গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত।
কে এই অদ্বৈত: আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরপরই মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সরকারি কলেজ শাখায় পদায়ন পান সরকারি কলেজের শিক্ষক অদ্বৈত। কলেজ জাতীয়করণের লক্ষ্যে পরিদর্শনে গিয়ে কোটি কোটি টাকা ঘুষ নেয়ার অভিযোগ অদ্বৈতর বিরুদ্ধে। ঘুষের টাকার একাংশ খরচ হয় মন্ত্রীর সাবেক একজন এপিএসএর সিন্ডিকেটের মাস্তিতে ও শিক্ষা অধিদপ্তরের তৎকালীন মহাপরিচালক অধ্যাপক মো: নোমান উর রশীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে। শিক্ষা অধিদপ্তরের পাঁচতলার এক কক্ষে প্রতিদিন সন্ধ্যায় বসত মাস্তি।
ঘুষের বিনিময়ে শিক্ষা ক্যাডারে আত্তীকরণের অযোগ্য শিক্ষককেও যোগ্য মর্মে ডজন ডজন প্রতিবেদন দেন অদ্বৈত। আবার সমিতি, ফোরাম ও নো বি সি এস নো ক্যাডার স্লোগানধারীদের সুনজরে থাকতে সরকারের কলেজ জাতীয়করণ ও আত্তীকরণ বিরোধী সভা-সমাবেশ ও মামলা-মোকদ্দমারও বড় ডোনার।
২০১৩ খ্রিস্টাব্দের ২৩ জুন শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে ঢাকা বোর্ডের উপ-কলেজ পরিদর্শক পদে প্রেষণে যোগ দেন তিনি। এই যোগদানের পেছনে কলকাঠী নাড়েন শিক্ষামন্ত্রীর সাবেক একজন এপিএস ও তৎকালীন যুগ্ম-সচিব মোল্লা জালাল। ২০১৭ খ্রিস্টাব্দে বোর্ডের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের পদ বাগান অদ্বৈত। চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি অদ্বৈতকে ঢাকার বাইরে বদলি করা হলেও কালো পোশাক পরিহিত একজন আন্তজার্তিক শিক্ষা মাফিয়া ডনের তদবিরে অদ্বৈত কুমারের বদলির আদেশ স্থগিত হয়। অদ্যাবধি তিনি ওই পদেই রয়েছেন।জানা যায়, শিক্ষামন্ত্রীর সাবেক পিএস এবং বর্তমানে অতিরিক্ত সচিব মোল্লা জালালও অদ্বৈতকে বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের পদে রাখতে সর্বাত্মক চেষ্টা করেন।
টাকার বিনিময়ে নতুন কলেজের অনুমতির পরিদর্শন প্রতিবেদন দেয়ারও অভিযোগ রয়েছে অদ্বৈতর বিরুদ্ধে।
ডেমরার আইডিয়াল ল্যাবরেটরি কলেজ থেকে ২০১৭ খ্রিস্টাব্দে এইচএসসিতে মাত্র চার জন পরীক্ষায় অংশ নেয়। একই এলাকার ঢাকা চার্টার্ড কলেজ থেকে অংশ নেয় মাত্র তিনজন। ধানমন্ডির নিউ ক্যাসেল কলেজ থেকে ৬ জন ও জাস্ট ইন্টারন্যাশনাল কলেজ থেকে চার জন। এইসব কলেজের অনুমতি থাকার কথা নয়। কিন্তু অদ্বৈত গংদের জাদুমন্ত্রে টিকে রয়েছে এসব কলেজ। শুধু টিকে থাকাই নয় প্রয়োজন না থাকলেও প্রতিষ্ঠা হচ্ছে নতুন নতুন কলেজ।